শুক্রবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১২



বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আইন প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন৷

যেহেতু বিদ্যমান রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটকে একটি সংবিধিবদ্ধ স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

সেহেতু এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-
সূচী
ধারাসমূহ
১৷ সংক্ষিপ্ত শিরোনামা ও প্রবর্তন
২৷ সংজ্ঞা
৩৷ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা
৪৷ প্রধান কার্যালয়
৫৷ পরিচালনা ও প্রশাসন
৬৷ পরিচালনা বোর্ড ও ইহার গঠন
৭৷ সদস্যের মেয়াদ
৮৷ সদস্যের অযোগ্যতা
৯৷ ইনস্টিটিউট এর কার্যাবলী
১০৷ পরিচালক
১১৷ বোর্ডের সভা
১২৷ কমিটি
১৩৷ নির্দেশ প্রদানের ক্ষমতা
১৪৷ চেয়ারম্যান-এর বিশেষ ক্ষমতা
১৫৷ ইনস্টিটিউটের তহবিল
১৬৷ ঋণ গ্রহণের ক্ষমতা
১৭৷ কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ
১৮৷ বার্ষিক বাজেট বিবরণী
১৯৷ হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা
২০৷ হিসাব বিবরণী, ইত্যাদি
২১৷ ক্ষমতা অর্পণ
২২৷ দায়মুক্তি
২৩৷ বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
২৪৷ প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
২৫৷ রহিতকরণ ও হেফাজত

 সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন ঃ

১৷ (১) এই আইন বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আইন, ২০০৩ নামে অভিহিত হইবে৷

(২) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে এই আইন বলবত্ হইবে৷

সংজ্ঞা ঃ
২৷ বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-

(ক) “ইনস্টিটিউট” অর্থ ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট;

(খ) “চেয়ারম্যান” অর্থ বোর্ডের চেয়ারম্যান;

(গ) “পরিচালক” অর্থ ইনস্টিটিউট এর পরিচালক;

(ঘ) “প্রবিধান” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;

(ঙ) “বোর্ড” অর্থ ধারা ৬ এর অধীন গঠিত পরিচালনা বোর্ড;

(চ) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

(ছ) “সদস্য” অর্থ বোর্ডের সদস্য এবং চেয়ারম্যানও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন৷


ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা

৩৷ (১) এই আইন বলবত্ হইবার সংগে সংগে বিদ্যমান রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, এই আইনের অধীন বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নামে একটি সংবিধিবদ্ধ স্বতন্ত্র সংস্থা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হইবে৷

(২) ইনস্টিটিউটের স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার এবং হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে৷


(৩) “বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট”- এই নামে ইনস্টিটিউট কর্তৃক বা ইনস্টিটিউট এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যাইবে৷


প্রধান কার্যালয়য় ঃ

৪৷ ইনস্টিটিউটের প্রধান কার্যালয় রাজশাহীতে থাকিবে এবং ইহা প্রয়োজনবোধে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের যে কোন স্থানে শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে৷

পরিচালনা ও প্রশাসনন ঃ

৫৷ ইনস্টিটিউটের পরিচালনা ও প্রশাসন বোর্ডের উপর ন্যস্ত থাকিবে৷

পরিচালনা বোর্ড ও ইহার গঠনঃ

৬৷ (১) ইনস্টিটিউটের একটি পরিচালনা বোর্ড থাকিবে, যাহা নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে, যথা:-

(ক) বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী, যিনি বোর্ডের চেয়ারম্যানও হইবেন;

(খ) বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, যদি থাকে, যিনি বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যানও হইবেন;

(গ) সচিব, বস্ত্র মন্ত্রণালয়, যিনি বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যানও হইবেন;

(ঘ) সংস্থাপন মন্ত্রণালয় বা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত অন্যুন যুগ্ম-সচিব এর পদমর্যাদাসম্পন্ন ইহার একজন কর্মকর্তা;

(ঙ) অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত অন্যুন যুগ্ম-সচিব এর পদমর্যাদাসম্পন্ন ইহার একজন কর্মকর্তা;

(চ) কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত অন্যুন যুগ্ম-সচিব এর পদমর্যাদাসম্পন্ন ইহার একজন কর্মকর্তা;

(ছ) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ রেশম বোর্ড, রাজশাহী;

(জ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশ সিল্ক ফাউন্ডেশন, ঢাকা;

(ঝ) সরকার কর্তৃক মনোনীত রেশম পোকা পালনকারী, রেশম সুতা উত্পাদনকারী, রেশম বস্ত্র বুননকারী বা রেশম পণ্যের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্য হইতে একজন এবং রেশম চাষের সহিত সম্পৃক্ত বেসরকারী সংস্থার (এন, জি, ও) মধ্য হইতে দুইজন প্রতিনিধি;

(ঞ) পরিচালক, যিনি বোর্ডের সচিবও হইবেন৷

(২) শুধুমাত্র কোন সদস্য পদে শূন্যতা বা বোর্ড গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে বোর্ডের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা তত্সম্পর্কে কোন প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না৷


সদস্যের মেয়াদঃ

৭৷ (১) ধারা ৮ এর বিধান সাপেক্ষে, ধারা ৬ (১) এর দফা (ঝ) এর অধীন মনোনীত সদস্যের মেয়াদ হইবে তাহার মনোনয়নের তারিখ হইতে পরবর্তী তিন বত্সর৷

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত যে কোন মনোনীত সদস্য চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন৷



সদস্যের অযোগ্যতাঃ
৮৷ (১) কোন ব্যক্তি ধারা ৬ (১) এর দফা (ঝ) এর অধীন সদস্য হইবার বা থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি-

(ক) তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেন বা হারান;

(খ) কোন আদালত তাঁহাকে অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষণা করে;

(গ) তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া আদালত কর্তৃক অন্যুন এক বত্সরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বত্সরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে; অথবা

(ঘ) তিনি দেউলিয়া ঘোষিত হইবার দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করিয়া থাকেন৷

(২) উপ-ধারা (১) এ বিদ্যমান বিধান থাকা সত্ত্বেও সরকার ধারা ৬(১) এর দফা (ক) হইতে (গ) এ উল্লিখিত সদস্য ব্যতীত যে কোন সদস্যকে লিখিত আদেশের মাধ্যমে অপসারণ করিতে পারিবেন, যদি তিনি-

(ক) এই আইনের অধীন তাঁহার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন বা অস্বীকার করেন বা সরকারের বিবেচনায় দায়িত্ব সম্পাদনে অক্ষম বিবেচিত হন; অথবা

(খ) সরকারের বিবেচনায় সদস্য হিসাবে তাঁহার পদের অপব্যবহার করিয়াছেন; অথবা

(গ) সরকারের লিখিত অনুমতি ব্যতীত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিজে বা কোন অংশীদারের মাধ্যমে জ্ঞাতসারে ইনস্টিটিউট বা ইনস্টিটিউট এর পক্ষে কোন চুক্তি বা চাকুরী সংক্রান্ত বিষয়ে লাভজনক কিছু অর্জন করেন বা অধিকারে রাখেন৷


ইনস্টিটিউট এর কার্যাবলী ঃ

৯৷ ইনস্টিটিউট এর কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ-

(ক) রেশম চাষ ও রেশম শিল্পের বৈজ্ঞানিক, কারিগরী ও আর্থিক গবেষণা ও প্রশিক্ষণে সহায়তা অথবা উত্সাহ প্রদান;

(খ) তুঁত, ভেরেণ্ডা ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য উদ্ভিদের উন্নতমানের চাষাবাদের পদ্ধতি উদ্ভাবন করা;

(গ) রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের নিকট সংরক্ষিত এবং ভবিষ্যতে সংগ্রহিতব্য সকল প্রকার রেশম পোকার জাত সংরক্ষণ নিশ্চিতকরণ;

(ঘ) উন্নতজাতের সুস্থ পলুপোকার ডিম পালন, উদ্ভাবন ও উহা বাংলাদেশ রেশম বোর্ড, বাংলাদেশ সিল্ক ফাউন্ডেশনসহ রেশম চাষের সাথে সম্পৃক্ত এনজিও বা অনুরূপ সংস্থার মাধ্যমে রেশম চাষীদের মধ্যে বিতরণ করা;

(ঙ) রেশম গুটি হইতে সুতা আহরণ এবং কাঁচা রেশমের গুণগতমান ও উত্পাদনশীলতা বৃদ্ধি করা;

(চ) চরকা রিলিং ও ফিলেচারে নিয়োজিত ব্যক্তিদেরকে কারিগরী পরামর্শ প্রদান;

(ছ) কাঁচা রেশম ও রেশম পণ্যের মান উন্নয়ন করা;

(জ) রেশম চাষ ও শিল্পের সহিত সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণের সুবিধাদি সৃষ্টি করা এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করা;

(ঝ) সিল্ক রিয়ারার, রিলার, স্পীনার, উইভার ও প্রিন্টারদের প্রশিক্ষণ দানের সুবিধা সৃষ্টি করা;

(ঞ) গবেষণা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফলসমূহ মাঠ পর্যায়ে স্থানান্তর এবং এইগুলোর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণ;

(ট) রেশম চাষ ও রেশম শিল্পে নিয়োজিত পেশাজীবীদের সুবিধাদি ও প্রশিক্ষণ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য প্রকল্প প্রণয়ন, পরিচালন ও বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা;

(ঠ) উপরি-উক্ত কার্যাদি সম্পাদনের ক্ষেত্রে যেইরূপ প্রয়োজন অথবা সুবিধাজনক হয় সেইরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ করা৷




পরিচালকঃ
১০৷ (১) ইনস্টিটিউটের একজন পরিচালক থাকিবেন৷

(২) পরিচালক সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাঁহার চাকুরীর শর্তাদি সরকার কর্তৃক স্থিরকৃত হইবে৷

(৩) পরিচালকের পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে পরিচালক তাঁহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, শূন্য পদে নবনিযুক্ত পরিচালক কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা পরিচালক পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক মনোনীত কোন ব্যক্তি পরিচালকরূপে দায়িত্ব পালন করিবেন৷

(৪) পরিচালক ইনস্টিটিউটের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হইবেন এবং তিনি-

(ক) বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবেন;

(খ) বোর্ডের নির্দেশ মোতাবেক ইনস্টিটিউটের অন্যান্য কার্য সম্পাদন করিবেন৷



বোর্ডের সভা ঃ
১১৷ (১) এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, বোর্ড উহার সভার কার্যপদ্ধতি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারণ করিবে৷

(২) বোর্ডের সভা চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, প্রতি ছয় মাসে বোর্ডের কমপক্ষে একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে৷

(৩) চেয়ারম্যান বোর্ডের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাঁহার অনুপস্থিতিতে ভাইস-চেয়ারম্যান সভায় সভাপতিত্ব করিবেন৷

(৪) বোর্ডের সভার সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারীর দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে৷

(৫) চেয়ারম্যানের পক্ষে সময় দেওয়া সম্ভব না হইলে, চেয়ারম্যানের অনুমতিক্রমে, ভাইস-চেয়ারম্যান সভা আহ্বান ও পরিচালনা করিতে পারিবেন৷




কমিটিঃ
১২৷ বোর্ড উহার দায়িত্ব পালনে উহাকে সহায়তাদানের জন্য এক বা একাধিক কমিটি গঠন করিতে পারিবে৷

নির্দেশ প্রদানের ক্ষমতাঃ

১৩৷ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, এই আইনের বিধানাবলীর সাথে অসংগিতপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে, ইনস্টিটিউটকে যে কোন নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে এবং ইনস্টিটিউট উহা পালন করিতে বাধ্য থাকিবে৷


চেয়ারম্যান-এর বিশেষ ক্ষমতাঃ
১৪৷ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, এই আইনের বিধানাবলীর সাথে অসংগতিপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে, ইনস্টিটিউট এর স্বার্থে তাত্ক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে চেয়ারম্যান যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতে পারিবেন এবং যাহা বোর্ডের পরবর্তী সভায় অনুমোদিত হইতে হইবে৷


ইনস্টিটিউটের তহবিলঃ

১৫৷ (১) ইনস্টিটিউটের একটি তহবিল থাকিবে এবং উহাতে-

(ক) সরকারী অনুদান;

(খ) স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুদান;

(গ) ইনস্টিটিউটের সম্পত্তি বিক্রয়লব্ধ অর্থ;

(ঘ) সরকারের অনুমোদনক্রমে, কোন বিদেশী সরকার বা প্রতিষ্ঠান হইতে গৃহীত দান, সাহায্য বা মঞ্জুরী;

(ঙ) ইনস্টিটিউট কর্তৃক প্রাপ্ত অন্য যে কোন অর্থ, জমা হইবে৷

(২) ইনস্টিটিউটের তহবিল বোর্ডের অনুমোদনক্রমে যে কোন তফসিলি ব্যাংকে জমা রাখা হইবে৷

(৩) ইনস্টিটিউট উহার দায়িত্ব পালনের প্রয়োজনে উহার তহবিল ব্যবহার করিতে পারিবে৷



ঋণ গ্রহণের ক্ষমতাঃ

১৬৷ ইনস্টিটিউট উহার কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কোন তফসিলি ব্যাংক হইতে ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে৷


 কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগঃ

১৭৷ ইনস্টিটিউট উহার দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে এবং তাহাদের চাকুরীর শর্তাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷


বার্ষিক বাজেট বিবরণী ঃ
১৮৷ ইনস্টিটিউট প্রতি বত্সর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরবর্তী বত্সরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থ-বত্সরে সরকারের নিকট হইতে ইনস্টিটিউটের কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন উহার উল্লেখ থাকিবে৷



হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষাঃ

১৯৷ (১) ইনস্টিটিউট যথাযথভাবে উহার হিসাবরক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে৷

(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর “মহা হিসাব নিরীক্ষক” নামে অভিহিত, প্রতি বত্সর ইনস্টিটিউটের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা রিপোর্টের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও ইনস্টিটিউটের নিকট প্রেরণ করিবেন৷

(৩) উপ-ধারা (২) মোতাবেক হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা-হিসাব নিরীক্ষক কিংবা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি ইনস্টিটিউটের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভাণ্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং ইনস্টিটিউটের যে কোন সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন৷



হিসাব বিবরণী, ইত্যাদিঃ

২০৷ (১) ইনস্টিটিউট প্রত্যেক অর্থ-বত্সর শেষে নিরীক্ষিত হিসাব বিবরণী, মন্তব্যসহ, সরকারের নিকট দাখিল করিবে এবং এতদ্‌বিষয়ে ইনস্টিটিউট এর কর্মকাণ্ডের উপর একটি বার্ষিক বিবরণীও দাখিল করিবে৷

(২) ইনস্টিটিউট সরকার কর্তৃক, সময়ে সময়ে, চাহিদাকৃত বিবরণী, রিটার্ণ ও প্রতিবেদন সরকারের নিকট দাখিল করিবে৷
ক্ষমতা অর্পণঃ
২১৷ বোর্ড উহার যে কোন ক্ষমতা, তত্কর্তৃক নির্ধারিত শর্তে, চেয়ারম্যান বা অন্য কোন সদস্য বা পরিচালক বা ইনস্টিটিউটের অন্য কোন কর্মকর্তাকে অর্পণ করিতে পারিবে৷

দায়মুক্তিঃ

২২৷ এই আইনের অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কাজের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা তাঁহার ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে তজ্জন্য চেয়ারম্যান, সদস্য, পরিচালক বা ইনস্টিটিউটের অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোন দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলা বা অন্য কোন প্রকার আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে না৷



বিধি প্রণয়নের ক্ষমতাঃ
২৩৷ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে৷

প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতাঃ
২৪৷ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ইনস্টিটিউট, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, এবং সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে৷



রহিতকরণ ও হেফাজতঃ
২৫৷ এই আইন বলবত্ হইবার সংগে সংগে বাংলাদেশ সেরিকালচার বোর্ড এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে ২২শে ডিসেম্বর, ২০০১ তারিখে সম্পাদিত চুক্তি, অতঃপর চুক্তি বলিয়া উল্লিখিত, বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে৷ উক্ত চুক্তি বাতিল হইবার সংগে সংগে-

(ক) উক্ত চুক্তির অধীন হস্তান্তরিত বাংলাদেশ সেরিকালচার রিসার্চ ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, অতঃপর বিলুপ্ত ইনস্টিটিউট বলিয়া উল্লিখিত, বিলুপ্ত হইবে;

(খ) বিলুপ্ত ইনস্টিটিউটের সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, সুবিধাদি এবং স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি, নগদ এবং ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ এবং অন্য সকল দাবী ও অধিকার ইনস্টিটিউটে হস্তান্তরিত হইবে এবং ইনস্টিটিউট উহার অধিকারী হইবে;

(গ) বিলুপ্ত ইনস্টিটিউট কর্তৃক বা উহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মামলা -মোকদ্দমা ইনস্টিটিউট কর্তৃক বা উহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা মোকদ্দমা বলিয়া গণ্য হইবে;

(ঘ) বিলুপ্ত ইনস্টিটিউটের সকল ঋণ, দায় এবং দায়িত্ব ইনস্টিটিউটের ঋণ, দায় ও দায়িত্ব হইবে;

(ঙ) বিলুপ্ত ইনস্টিটিউটের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী ইনস্টিটিউটে বদলী হইবেন এবং তাহারা ইনস্টিটিউট কর্তৃক নিযুক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারী বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উক্তরূপ বদলীর পূর্বে তাহারা যে শর্তে চাকুরীতে নিয়োজিত ছিলেন, ইনস্টিটিউট কর্তৃক পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তে তাহারা ইনস্টিটিউটের চাকুরীতে নিয়োজিত থাকিবেন৷

বুধবার, ৪ এপ্রিল, ২০১২

রেশমের সুদিন ফিরে এসেছে



রেশমের সুদিন ফিরে এসেছে

খাসজমি রেশম চাষের আওতায় আনার দাবি


মোঃ সালাউদ্দিন )( ভোলাহাট [ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ] :: রেশমের সুদিন ফিরে আসলেও দেশের শতকরা ৭৫ ভাগ কাঁচা রেশম উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে রেশমের রাজধানী ও রেশমের প্রাচীন নগরী নামে পরিচিত ঐতিহ্যবাহী ভোলাহাট উপজেলার রেশমচাষীরা রেশম চাষে আগ্রহী হলেও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে রেশম চাষে ফিরে আসতে পারছে না।


৯০-এর দশকে সরকারের আত্মঘাতী ভ্রান্তনীতির কারণে তথা উদার বাজার অর্থনীতির ধাক্কায় এ অঞ্চলের রেশম চাষ মুখ থুবড়ে পড়ে । বিদেশী রেশম সূতা শুল্কমুক্তভাবে দেশের বাজারে প্রবেশ করায় পুরো রেশমের বাজার চলে যায় বিদেশী রেশম সুতার হাতে। আর দেশী রেশম সুতা গুণ, মান ও কম মূল্যের কারণে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে মূল বলয় হতে ছিটকে পড়ে ধ্বংস হয়ে যায়। রেশম চাষীরা বাধ্য হয়ে  চৌদ্দ পুরুষের পেশা রেশম চাষ ছেড়ে অনাহার, অর্ধাহার ও ঋণগ্রস্ত হয়ে চলে যায় অন্য পেশায়। ফলে মূল্যবান তুঁত জমিগুলো পরিণত হয় আম বাগান ও সবজির জমিতে। সে সময় রেশম গুটির মূল্য সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে সর্ব নিম্ন দর মণপ্রতি মাত্র দেড় হাজার টাকায় নেমে আসে। ফলে দেশীয় রেশম শিল্পের ঘটে সর্বনাশ। আজ প্রায় ২০ বছর ব্যবধানে সেই ধ্বংস প্রাপ্ত রেশম শিল্প আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিদেশী রেশম সূতায় পর্যাপ্ত করারোপ করায় দেশী রেশম সূতার যেমন মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, সে সাথে কদরও। বর্তমানে প্রতি মণ রেশম গুটি ৯-১০ হাজার টাকা মণ দরে ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে। তা দেখে আদি রেশম চাষীরা আবারো আগ্রহী হয়ে উঠেছে রেশম চাষে। ঘর মুখো হয়ে আবারো ফিরতে চায় রেশম চাষে।
একেতো মূল্য বৃদ্ধি তার ওপর ইতোপূর্বে ১০০ ডিম বীজ পালন করে যেখানে ২৫-৩০ কেজি গুঁটি হতো, সেই স্থানে রিসার্চ এ্যাকশন প্ল্যান উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন ও  আধুনিক পলু পালনে প্রশিক্ষণ দিয়ে  বর্তমানে  ১০০ ডিম বীজে উৎপাদন করছে ৭৫ হতে ৮০ কেজি। এর মূল্য প্রায়  ১৫ হতে ২০ হাজার টাকা। সে হিসেবে বর্তমানে রেশম বোর্ডের তথ্যানুযায়ী এক বিঘে জমিতে ৩০০ ডিম বীজ পালন করে একটি মৌসুমে সহজেই ১৮০-২৪০ কেজি কাঁচা রেশম বা রেশম গুটি উৎপাদন করা সম্ভব। সে হিসেবে বছরে চারটি রেশম মৌসুমে এক বিঘে জমি হতে ৭২০ হতে ৯৬০ কেজি রেশমগুটি উৎপাদন সম্ভব। এর মূল্য প্রচলিত বাজারে দাড়ায় ১ লাখ ৮০ হাজার থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। যা অন্য কোনো ফসলে এক  বিঘে জমি হতে বছরে এত টাকা আয় করা সম্ভব নয়।
এ দিক লক্ষ্য রেখে ভোলাহাটের সুনিপুন আদী ও অকৃত্রিম হাজারো রেশম চাষী আবারো রেশম চাষে আগ্রহী। কিন্তু তুঁত চাষ উপযোগী জমি পাওয়া যাচ্ছে না। যেহেতু তুঁত জমিগুলো  আম বাগানে পরিণত হয়েছে, তা বিনিষ্ট করা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে রেশম চাষীরা পড়েছে উভয় সংকটে। রেশম চাষীদের দাবী ১৯৪৭ এর পরবর্তী সময়ে মহানন্দা নদীর সর্বনাশা ভাঙ্গনে প্রায় ২৬২ একর মূল্যবান তুঁত জমি পর্যায়ক্রমে নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যায়। ভেঙ্গেছে এপার আর গড়েছে ওপার। তাই ভারত সীমানা জুড়ে জেগে উঠেছে বিশাল চর। এটি বর্তমানে উঁচু জমিতে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘ ৬৫ বছর উক্ত চরের জমি ভারত পর্যায়ক্রমে কুক্ষীগত ও ভোগ দখল করে আসছিল। ২০০৮ সালে আপোসে উভয় দেশের জরীপ ও সীমান্ত রক্ষীদের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণের পর ২০১১ সালে চূড়ান্তভাবে বাংলাদেশ ওই  চরের অধিকার ফিরে পেয়েছে। ভোলাহাটের আম জনতা, হাজারো আদি রেশম চাষী ও বোর্ড কর্তৃপক্ষ উক্ত নদী শিতস্তী চরের জমি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকৃত আদী প্রান্তিক রেশম চাষীদের খন্ডকালীন মেয়াদী লীজের মাধ্যমে প্রদানের জন্য জেলা প্রশাসক এবং রেশম বোর্ড বরাবরে লিখিত আবেদন জানিয়েছে। রেশম চাষীদের অভিমত উক্ত বিষয় বাস্তবায়ন করলে আবারো রেশমের সুদিন ফেরে আসবে। অর্থনৈতিক সাবলম্বি, বেকারত্ব লাঘব ও অধিকতর বেকার নারীর কর্মসংস্থান হবে। রেশম শিল্পে স্বনির্ভর হবে দেশ।               রেশম বহু উৎপাদন মুখী একটি কৃষি ভিত্তিক শিল্প। এর একদিক (ডিম হতে গুটি উৎপাদন পর্যন্ত) কৃষি ভিত্তিক এবং গুটি হতে বস্ত্র উৎপাদন পর্যন্ত শিল্প ভিত্তিক। রেশম শিল্পে ফেলানা বা ওয়েস্টেজ বলতে কিছু নেই। এর রেশম তুঁত পাতার উচ্ছিষ্টাংশ ডাটা হতে আসে জ্বালানী ও গো খাদ্য, রেশম গুটি হতে আসে ওয়েস্টেজ । ওয়েস্টেজ হতে আসে  লাট, ঝুট, গেঁটে। এ ওয়েস্টেজও ফেলানা নয়। ওই  ওয়েস্টেজ হতে আসে মটকা স্পান সিল্ক বা খাদী, যা মহিলারা টাকু ও চরকার সাহায্যে আরেক ধরণের সুতা উৎপাদন করে থাকে। রেশম কীটের মলমূত্র থেকে আসে উন্নতমানের জৈব সার। রেশম গুটির মথ হতে আসে উৎকৃষ্ট মানের গবাদী পশু ও হাঁসমুরগীর খাবার।
তাই রেশম শিল্প গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য একটি আর্শিবাদ। এ শিল্পে বেকারত্ব থাকে না। পঙ্গু মানুষও রেশম চাষের সহায়ক ভূমিকা রাখতে সক্ষম। তাই রেশম চাষ পুঁজি বিহীন আত্মকর্মসংস্থান গড়ে তুলতে সহায়ক এবং আত্মমর্যাদা ও অর্থনৈতিক স্বাবলম্বি হবার বিশেষতঃ মহিলাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অন্যতম প্রধান উপাদান। দেশ ও বিদেশে রেশম চাহিদা প্রচুর। বর্তমানে দেশে প্রতিবছর রেশমের চাহিদা ৩০০ মেঃ টন।  বর্তমানে উৎপাদিত হচ্ছে ৫০ মেঃ টন। বাকী রেশম সুতা আমদানী করতে হচ্ছে বিদেশ হতে। দেশে ব্যাপক হারে রেশম চাষের ক্ষেত্র সৃষ্টি হলে দেশের চাহিদা মিটিয়েও প্রচুর পরিমাণ রেশম বস্ত্র বিদেশে রপ্তানির সম্ভাবনা অতুজ্জ্বল বলে মতামত দিয়েছেন সিল্ক ম্যানুফ্যাকচার এন্ড এক্সপোট এ্যাশোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (সেমাব) এর সভাপতি মোঃ আলাউদ্দিন। তিনি ভোলাহাটের রেশম চাষীদের সাথে এ বিষয়ে একমত এবং তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালের পর মহানন্দা নদীর গর্ভে বহু মূল্যবান তুঁত জমি বিলীন হয়ে যায়। বর্তমানে ওই  সমস্ত জমি জেগে উঠেছে মহানন্দার অপর পাড়ে ভারত সীমানা ঘেঁষে। দীর্ঘ ৬৫ বছর ভারত ওই  সমস্ত চরের জমি একতরফাভাবে ভোগ দখল করে আসছিল। বর্তমানে উক্ত জমি ২০১১ সালে ভারতের নিকট থেকে বাংলাদেশ বুঝে পেয়েছে। ২৬২ একর এলাকা বিশিষ্ট সুবিশাল ওই  চরে রেশম চাষ করলে ভোলাহাটে আবারো রেশমের সুদিন ফিরে আসবে। মুছে যাবে বেকারত্বের গ্লানি। ঘুচ যাবে অর্থনৈতিক দৈন্যতা। স্বাবলম্বি হবে এলাকাবাসী। দেশ হবে রেশম শিল্পে আত্মনির্ভরশীল। শুধু তাই নয় বিদেশেও রেশম বস্ত্র রপ্তানি করে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক অর্থ আয় করা সম্ভব। তিনি মহানন্দা চরের রেশম চাষ উপযোগী ওই  জমিগুলো  প্রকৃত ও আদী রেশম চাষীদের মেয়াদী ও খন্ড মেয়াদের লীজ দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক  বরাবরে আবেদন করেছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে রেশম বোর্ড চেয়ারম্যান সুনীল চন্দ্র পালও একমত এবং রেশম চাষ সম্প্রসারণের জন্য তিনি জেলা প্রশাসক বরাবরে রেশম চাষীদের লিখিত আবেদনটি পাঠিয়েছেন বলে জানান।  রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটউট এর পরিচালক আব্দুল হামিদ মিয়া ও এ বিষয়ে একমত পোষন করেন।তিনি বলেন পার্বত্য পট্টগ্রাম এর বিস্তির্ন পতিত জমি অনাবাদী পড়ে আছে।সেসকল জমি রেশম চাষের আওতায় আনা গেলে এ দেশের  প্রয়োজন মিটিয়ে অতিরিক্ত রেশম বিদেশে রপ্তানী করার মত  সম্ভাবনা  ও সুযোগ  রয়েছে ।
 চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক কেএম আলী আজম বলেন, যেহেতু ভোলাহাট উপজেলা রেশম শিল্পের কেন্দ্রভূমি। সেহেতু অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ দলের মতামত  ও জরীপ রিপোর্ট প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন। 
তিনি বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পদক্ষেপ নিলে ভোলাহাট তথা দেশের রেশম শিল্পের বৃহৎ স্বার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে জানান। এ বিষয়ে ভোলাহাট রেশম জোনের সহকারী পরিচালক মনিরুল ইসলাম জানান, স্থানটি রেশম চাষের উপযোগী। প্রকৃত প্রান্তিক রেশম চাষীদের মেয়াদী ভিত্তিতে লীজ দিলে রেশমের সুদিন ফিরে আসবে। স্বনির্ভরতা অর্জন করবে রেশম শিল্প। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ওই  স্থানে শাহ নিয়ামতউল্লাহ বহুমুখী রেশম কীট শিল্প সমবায় সমিতি লিঃ (রেজিঃ প্রাপ্ত) পরীক্ষা মূলকভাবে রেশম চাষ প্রক্রিয়া আরম্ভ করেছে। রেশম বোর্ডের খন্ডকালীন সদস্য ইয়াসিন আলী শাহ ও সেমাবের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহীর কমিটির ভোলাহাট প্রতিনিধি আব্দুর রহমান জিন্নাত একই কথা বলেন।

বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব


কাপ্তাই রেশম গবেষনা কেন্দ্র পুরোদরম চালু করা গেলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব






বার্তা লাইভ ২৪ ডটকম,মাহফুজ আলম, কাপ্তাই(২২ মার্চ): 

কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত চন্দ্রঘোনায় সম্ভাবনাময় আঞ্চলিক রেশম গবেষনা কেন্দ্রটি পুরোদমে চালু করা গেলে, অল্প সময়ের ব্যাবধানে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সহজ হতে পারে। পার্বত্য কাপ্তাইয়ের গরীব দুঃখী মানুষগুলো সল্প আয়ের বিনিময়ে শ্রম দিতে আগ্রহী। শ্রমিকদের যথাসময়ে অল্প খরচের বিনিময়ে কাজে লাগিয়ে রেশম গবেষনা কেন্দ্রটি পুরোপুরি চালু করার সুযোগ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও পার্বত্য কাপ্তাইয়ের পাহাড়ী মাটি, জলবায়ু ও আর্থসামাজিক অবস্থা পুরোপুরি অনুকুলে থাকা অবস্থায় কাপ্তাই এলাকায় চন্দ্রঘোনা রেশম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এই সুযোগকে কাজে লাগহাতে পারলে চন্দ্রঘোনা আঞ্চলিক গবেষনা কেন্দ্র থেকে রেশম চাষের উজ্বল সম্ভাবনা কাজে লাগবে। বিশেষ করে পার্বত্য কাপ্তাই অঞ্চলের চন্দ্রঘোনায় তুঁত ও অতুঁত রেশম চাষের অনুকুল পরিবেশ রয়েছে। রেশম গবেষনা কেন্দ্রটি রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাইয়ে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই নিরীহ-গরীব ও বেকার। তাই রেশম গবেষনা কেন্দ্রটি চালু করে বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থার পাশাপাশি পুরোদমে চালু করা গেলে পর্যাপ্ত বৈদেশিক অর্জন করার সুয়োগ সৃষ্টির পাশাপাশি সরকারও বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় পাবে। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধিপাবে তুঁত ও অতুঁত থেকে রেশম উৎপাদন। এই রেশম উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের চাহিদা পুরণ করে বিদেশেও রেশম রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সম্ভাবনার সুযোগ রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কাপ্তাই চন্দ্রঘোনা আঞ্চলিক গবেষনা কেন্দ্রটি তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান সরকার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার সরাসরি নিয়ন্ত্রনাধীন ১৯৬২ সালে রেশম বীজাগার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। এর পর রেশম বীজাগারটি বাংলাদেশ রেশম বোর্ডের আওতায় বীজ বর্ধন ও পুলুর মাতৃ পিতৃজাত (পিতৃ) রক্ষনাবেক্ষনের কাজে ব্যাবহৃত হয়ে আসছিল। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে সরকারী এক সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রেশম বোর্ডের নিয়ন্ত্রনাধীন কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা রেশম বীজাগারটিকে বাংলাদেশ রেশম গবেষনা ও প্রশিক্ষন ইন্সটিটিউটের (বিএসআরটিআই) অধিরে ন্যাস্ত করেচন্দ্রঘোনা আঞ্চলিক রেশম গবেষনাগারে রুপান্তরিত করে। 

বুধবার, ৭ মার্চ, ২০১২

বিলুপ্তির পথে দেশীয় রেশম শিল্প



 বিলুপ্তির পথে দেশীয় রেশম শিল্প
দেশবাসীর অগোচরেই নীরবে নিভৃতে দেশীয় রেশমি সুতোর দিন ফুরিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের কৌলিন্য, ঐতিহ্য-অহংকারের রেশম শিল্পের আজ বড় দুর্দিন। রেশমী সুতো এখন আসে চীন থেকে । আর সেই সুতোয়
 বোনা কাপড় রাজধানীসহ গোটা দেশে পরিচিতি পাচ্ছে রাজশাহী সিল্ক নামে। রেশম শিল্পের সোনালি অতীত এখন শুধুই ইতিহাস। বর্তমানে রাজশাহী সিল্কের অস্তিত্ব রয়েছে শুধু কাগজে-কলমে। অথচ অনেকেই জানেন না যে,এখন এই শিল্প আসলে রাজশাহীতে উৎপাদিত রেশম সুতোর উপর নির্ভরশীল নয়। রেশম শিল্পের মালিকরা বলছেন, দেশে রেশমী সুতোর উৎপাদন তলানিতে এসে ঠেকেছে। তাই এখন রাজশাহী সিল্কে ব্যবহৃত হয় চীন থেকে আমদানিকৃত রেশম সুতো।




প্রকাশ, বিদেশ থেকে সুতো কম আসায় সুতোর দাম দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে গেছে। বিগত বছর যে সুতো এক হাজার ২শ’ টাকা থেকে এক হাজার ৩শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, এবার তা বেড়ে আড়াই হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেছে। আর ব্যবসায়ীদেরকে বেল হিসাবে কিনতে হয় এই সুতো । ৬০-৭০ কেজিতে হয় এক বেল। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চরম প্রতিকূলতার মাঝে পড়ে অনেক প্রিন্টিং ও উইভিং ফ্যাক্টরী বন্ধ হয়ে গেছে। দেশের অন্যতম সিল্কের উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ঊষা সিল্ক প্রিন্টিং এন্ড উইভিং ফ্যাক্টরীর রেজাউল করিম রোকন ইত্তেফাককে জানান, দেশে এখন রেশমের পূর্ণাঙ্গ ফ্যাক্টরী আছে মোটে ৬টি। এছাড়া উইভিং আছে ২৫-২৬টি। প্রিন্টিং আছে ২৭টি। আগে ছিল শতাধিক। তিনি জানান, সিল্কের সুতো পুরোটাই প্রায় চীন থেকে আসে। দেশে কয়েকটি এনজিও এখন ভোলারহাট, নবাবগঞ্জ, শিবগঞ্জ, পঞ্চগড় ও বাঘায় রেশম চাষ করছে। দেশীয় রেশম অতি উন্নতমানের। এটার আঁশ মোটা। দামও কম। তবে তা চাহিদার তুলনায় কিছুই না।
এই শিল্পের দুরবস্থার নেপথ্যে রেশম ভবনগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রধানতম কারণ। সরেজমিনে দেখা যায়, চার বছর আগেও রেশম শিল্পের যে ভবনগুলো মুখরিত থাকতো মেশিনের একটানা আওয়াজ আর শ্রমিকদের কর্মচাঞ্চল্যে, ২০০২ সালের ৩০ নভেম্বর কারখানা বন্ধ হবার পর থেকে সেই ভবনগুলো এখন যেন মৃত্যুপুরি।
রাজশাহীর রেশম ব্যবসায়ীরা ইত্তেফাককে জানান, এখানকার কোন ব্যবসায়ীই এখন আর সুতো উৎপাদন করছেন না। এখন তাদের কার্যক্রম উইভিং, প্রিন্টিং আর মার্কেটিং পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। অথচ একসময় রাজশাহীতে ব্যবসায়ীরা সিল্ক সুতো উৎপাদন করতেন। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সুতোর পাশাপাশি চীন, ভিয়েতনাম, কোরিয়াসহ বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সামান্য পরিমাণে সুতো আমদানি করা হতো। তবে প্রসিদ্ধ রাজশাহী সিল্ক মূলত তৈরি হতো স্থানীয় সিল্ক সুতো থেকে।
স্থানীয় সিল্ক সুতোর বড় সরবরাহ আসতো প্রতিবেশী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট থেকে। সেখানে রেশম চাষিরা এটা ছেড়ে অন্য চাষাবাদে চলে গেছে। সেখানকার সিল্ক সুতো উৎপাদনের ইতিহাস প্রায় এক হাজার বছরের পুরানো। সেই সময় তৈরি সিল্ক কাপড়ের ৮০ শতাংশেই ব্যবহৃত হতো স্থানীয় সুতো। তখন যারা সুতো উৎপাদন করতেন, কেবল তারাই দেশের বাইরে থেকে সিল্ক সুতো আমদানির লাইসেন্স পেতেন। সেই দৃশ্যপট পাল্টে যায় ১৯৯১ সালের পর থেকে। সরকার নতুন করে সিদ্ধান্ত নেয় সিল্ক সুতা আমদানির লাইসেন্সের ক্ষেত্রে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্থানীয় পর্যায়ে সিল্ক সুতা উৎপাদন না করলেও যে কেউই তা আমদানি করতে পারবে। ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করতে ট্যাক্স তুলে নেয়া হয় আমদানিকারকদের ওপর থেকে। ফলে অতি উৎসাহী ব্যবসায়ীদের কারণে বাজার সয়লাব হতে শুরু করে চীন, কোরিয়া, ভিয়েতনাম আর উজবেকিস্তান থেকে আমদানি করা নিম্নমানের সিল্ক সুতা দিয়ে। সরকারি সিদ্ধান্তের সুযোগে এসব সুতার আমদানি যতো বাড়তে থাকে স্থানীয় সিল্ক সুতার উৎপাদনও ততোটাই হোঁচট খেতে থাকে।
এক পর্যায়ে সরকার আবারও নেয় নতুন সিদ্ধান্ত। এবারের সিদ্ধান্তে আমদানিকৃত সুতার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট নির্ধারিত হয়। পরে সেই ভ্যাট বাড়িয়ে ২২ শতাংশ করলেও এতে স্থানীয় পর্যায়ে সিল্ক সুতা উৎপাদন প্রক্রিয়ার কোনও ফায়দা হয়নি। উল্টো আরও বেশি বিপাকে পড়েছেন রেশম ব্যবসায়ীরা। এদিকে ২০০২ সালের ৩০ নভেম্বর রাজশাহী রেশম কারখানা বন্ধ ঘোষণার পর রেশম শিল্পকে বাঁচাতে স্থানীয় পর্যায়ে সরকারের কোনও উদ্যোগই আর অবশিষ্ট নেই। ২০০১ সালেই ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই কারখানায় বিএমআরআই মেশিন কেনা হয়। এর মাত্র এক বছরের ব্যবধানে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মেশিনগুলো পড়ে আছে অচল হয়ে।
বন্ধ হয়ে যাবার আগে রেশম কারখানার কাঁধে ছিল ১ কোটি ১৩ লাখ টাকা ঋণের বোঝা। অথচ ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর ১৯৬১ সালে ৪৭১ জন শ্রমিক-কর্মচারি নিয়ে চলতে শুরু করা ঐতিহ্যবাহী এই কারখানা ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত লাভের মুখ দেখেছে। ১৯৭৮ সালে রেশম বোর্ডের হাতে কারখানা ছেড়ে দেয়ার পর শুরু হয় লোকসানের পালা। সিবিএ নেতা আতাউর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ওই কারখানায় প্রায় ১২ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। এই কারখানাটি বন্ধের পর আবারও চালু হবে হবে করলেও আজও তা চালু হয়নি।
রাজশাহী রেশম বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. সওদাগর মাহফুজার রহমান জানান, রেশম কারখানাটিকে কিভাবে লাভজনক খাত হিসাবে চালু করা যায়, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আড়াই বছর আগে দায়িত্বে থাকাকালেই জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীকে আহ্বায়ক করে ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠিত হয়েছিলো। এই ব্যাপারে বর্তমান চেয়ারম্যান জানান, সর্বশেষ গত বছরের ৯ জুলাই আহবায়ক কমিটির সভা হয়েছে। ঐ সভায় রাজশাহী রেশম কারখানাটি আবারও চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু কারখানা চালু করার মত অর্থ রেশম বোর্ডের কাছে নেই। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে কিছু মূলধন পাওয়া গেলে কারখানা চালু করা যাবে। তবে বর্তমান মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন ইত্তেফাককে বলেছেন, আমি চেষ্টা করছি এই কারখানাটি আবারও চালু করার জন্য । সরকার সহযোগিতা করলে এই উদ্যোগ সফল হবে।
জানা যায়, রাজশাহী রেশম কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগেই রাজশাহীতে প্রস্তাবিত রেশম নগরী গড়ে তুলবার পরিকল্পনাটি বিএনপি সরকার বাতিল করে দিয়েছিল। সে সময় কারণ হিসাবে একটি বেসরকারি সংস্থার জরিপ তুলে ধরা হয়েছিল। প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে রেশম নগরী গড়ে তোলা যুক্তিহীন বলে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছিল ।

সোমবার, ৫ মার্চ, ২০১২

রাজশাহী সফরে মার্কীন রাষ্ট্রদূত: রেশম শিল্পে আশাবাদ






কালেরকন্ঠ
ঢাকা, শুক্রবার মার্চ ২০১২, ১৯ ফাল্গুন ১৪১৮, রবিউস সানি ১৪৩৩


তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে রাজনৈতিক ঐকমত্য চায় যুক্তরাষ্ট্র : মজিনাhttp://www.kalerkantho.com/images/box.jpg নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, একটি গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে এখানকার রাজনৈতিক দলের নেতারা একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য ঐকমত্যে পৌছাবেন এরপর নির্বাচন শেষে এর ফলাফলও সব দল মেনে নেবে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির কথা গতকাল বৃহস্পতিবার জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত সে দেশের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ সিরাজগঞ্জে পাঁচ দিনের সফর শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহীর অ্যারিস্টোক্র্যাট রেস্তোরাঁয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন
মজিনা বলেন, তিনি মনে করেন, বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের নেতারা ঐকমত্যে পৌছবেন কারণ জনগণ বুঝতে পারছে এখন বিশ্ব অর্থনীতির এমন একটা মুহূর্ত যখন বাংলাদেশ বাংলার বাঘ হতে পারে, রপ্তানির ক্ষেত্রে পরবর্তী চীন হতে পারে আর তা সম্ভব তৈরি পোশাক, হাউসহোল্ড টেক্সটাই, ওষুধ উৎপাদন, তৈরি চামড়া পণ্য এবং রেশম রপ্তানির মাধ্যমে মজিনা বলেন, ' মুহূর্তে এসব সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না এবং জাতি ভয়ানক রাজনৈতিক অস্থিরতায় ঝুঁকি নিতে পারে না সে জন্য আমি অত্যন্ত আশাবাদী, বড় দলের নেতারা পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি ঐকমত্যের কৌশল বের করবেনই'
তিস্তার পানিবণ্টন প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেন, 'এটা একটা জটিল ইস্যু আমি বিশ্বাস করি, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার, পশ্চিম বাংলা এবং বাংলাদেশ সরকার সমস্যা সমাধানে এমন একটা পথ বের করবে, যা দুই দেশের মানুষের জন্য ভালো হবে'
মজিনা তাঁর পাঁচ দিনের বৃহত্তর রাজশাহী সফর শেষে আরো বলেন, নতুন বাংলাদেশ, সোনার বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে অঞ্চলের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ৫০ টন রেশম উৎপাদিত হয় কিন্তু দেশের চাহিদা ৩০০ টন তবে বাংলাদেশ ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে হাজার হাজার টন কাঁচা রেশম উৎপাদন করার সক্ষমতা রাখে রেশমশিল্প মেয়েদের ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে 
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার পর দুপুর ২টায় রাষ্ট্রদূত মজিনা রাজশাহী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে কমিউনিটি পুলিশিং উৎসবে যোগদান করেন সেখানে তিনি বলেন, সুন্দর রাজশাহীকে নিরাপদ সুরক্ষিত রাখতে বাংলাদেশ পুলিশ, যুক্তরাষ্ট্র সরকার দি এশিয়া ফাউন্ডেশন পুলিশ অফিসারদের পুলিশিংয়ের নতুন ধারায় প্রশিক্ষিত করেছে ধারার নাম কমিউনিটি পুলিশিং
অনুষ্ঠানে রাজশাহী রেঞ্জ পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল সিদ্দিকুর রহমান, মহানগর পুলিশের কমিশনার এম ওবাইদুল্লাহ, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট মেহরাব হোসেন অপি উপস্থিত ছিলেন





প্রথমআলো

রাজশাহীতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত

দলগুলো সমঝোতার একটি কৌশল বের করবেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী | তারিখ: ০২-০৩-২০১২
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা বলেছেন, বাংলাদেশে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য বড় দলগুলো নিজেদের মধ্যে সমঝোতার একটি কৌশল বের করবেই ব্যাপারে তিনি আশাবাদী
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহীর একটি রেস্তোরাঁয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মার্কিন রাষ্ট্রদূত কথা বলেন রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ নওগাঁয় তাঁর পাঁচ দিনের সফর গতকাল শেষ হয়েছে
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো সমঝোতায় পৌঁছাবেএটাই যুক্তরাষ্ট্র চায়
মজিনা বলেন, তৈরি পোশাক শিল্প, গৃহস্থালি বস্ত্র, ওষুধ, চামড়া পণ্য রেশম রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে দেশের এই সম্ভাবনাময় মুহূর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশের সৃষ্টি হোক, বাংলাদেশের মানুষ সেই ঝুঁকি নিতে চাইবে না
তিস্তার পানি বণ্টন প্রশ্নে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এটা একটা জটিল ইস্যু আমি বিশ্বাস করি, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার, পশ্চিমবঙ্গ সরকার বাংলাদেশ সরকার এই সমস্যা সমাধানে একটা পথ বের করবে, যা হবে দুই দেশের মানুষের জন্যই ভালো 
বিকেলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে ট্রেনে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন 
বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর পরিদর্শন: আমাদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, রাষ্ট্রদূত মজিনা গতকাল সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর পরিদর্শন করেন জাদুঘরের প্রত্নসামগ্রী প্রাচীন পুঁথির সংগ্রহ ঘুরে দেখার পাশাপাশি তিনি জাদুঘরের রক্ষণাবেক্ষণ পুনঃ সজ্জিতকরণ কার্যক্রম সম্পর্কে খোঁজখবর নেন
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম আবদুস সোবহানের সঙ্গে তাঁর বাসভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গবেষণা কার্যক্রমসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন