শরীফ সুমন, জেলা প্রতিনিধি
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
তিনি বলেন, ‘এ সংক্রান্ত একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি বোর্ডের বিদ্যমান আইন সংশোধন ও খসড়া অনুমোদনের জন্য প্রথমে আইন মন্ত্রণালয়ে এবং পরে সংসদে যাবে।’
বাংলাদেশ রেশম বোর্ডের চেয়ারম্যান সুনীল চন্দ্র পাল আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘বর্তমান সরকারের অধীনেই এ ৩টি প্রতিষ্ঠানকে একীভূতকরণের কাজ সম্পন্ন হবে।’ তা সম্ভব হলে রেশমের সুদিন ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে, রেশম শিল্পকে রক্ষার স্বার্থে সহজ শর্তে চাষীদের শিগগিরই রেশম চাষে ব্যাংক ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানালেন রেশম বোর্ডের উপ-প্রধান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবু তাহের সরদার।
এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের সম্মতির পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। তবে চূড়ান্ত অনুমোদনের পরই চাষীদের ঋণ সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে রেশম বোর্ডে লোকবলের সঙ্কট চলছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে অনুমোদিত পদ রয়েছে ৫শ ৩০টি। এর মধ্যে ১শ ৫০টি পদ নানা কারণে শূন্য রয়েছে। মাস্টার রোল কর্মচারী রয়েছেন মাত্র ৩০ জন।
তিনি জানান, এছাড়াও অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করছেন ৬ হাজারেরও বেশি শ্রমিক। অনুমোদিত পদগুলো শূন্য থাকায় রেশম বোর্ডের কাজকর্মে বিরাজ করছে স্থবিরতা।
উপ-প্রধান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবু তাহের সরদার আরো জানান, দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে রেশম বোর্ডকে পুনর্গঠিত করে জনবল সঙ্কট নিরসনের পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ে রেশম চাষীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা গেলে এ শিল্পের সুদিন ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে তিনিও একমত প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটউটের পরিচালক এম এ হামিদ মিয়া বলেন, রেশম শিল্পের উন্নয়নকল্পে -
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
![]() |
রাজশাহী: রেশমের অতীত ঐতিহ্য এখন কেবলই ইতিহাস! সেই অতীত ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে রেশম বোর্ডকে পুনর্গঠন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
দেরিতে হলেও এ উদ্যোগকে শুভ উদ্যোগ হিসেবেই বিবেচনা করছেন সবাই। কালের আবর্তে নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে রূপ নেওয়া ‘রেশম বোর্ড’, ‘সিল্ক ফাউন্ডেশন ও `রেশম প্রশিক্ষণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট’কে একীভূত করার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে আবারও রেশমের সুদিন ফিরে আসবে বলে আশা করছেন সবাই।
বাংলাদেশে রেশম শিল্পের ইতিহাস অনেক প্রাচীন। সপ্তদশ শতাব্দী থেকে এ অঞ্চল ‘রেশম ভাণ্ডার’ হিসেবে পরিচিত। উপনিবেশ আমলে এ শিল্পের তেমন উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ ঘটেনি বরং ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে হাজির হয়। দেশভাগের পর তৎকালীন পাকিস্তান সরকারও এর উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। সে সময় রাজশাহীতে কেবল কয়েকটি নার্সারি, রেশম ও লাক্ষাশিল্প প্রযুক্তি ইন্সটিটিউট এবং রেশম কারখানা স্থাপন করা হয়।
এরপর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের একটি উপখাত হিসেবে রেশমশিল্পকে বিবেচনা করা হলেও এর অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় অর্থ ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা তেমন একটা পাওয়া যায়নি। ফলে, এ শিল্পের বিকাশ না হয়ে বরং বিনাশের দিকে আগাতে থাকে।
এ ৩টি প্রতিষ্ঠানকে একীভূতকরণ সম্পর্কে বাংলাদেশ রেশম বোর্ডের চেয়ারম্যান সুনীল চন্দ্র পাল বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিশ্বের যে সব দেশ রেশম চাষে সবার শীর্ষে, সে দেশগুলোতে রেশম সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান রেশম বোর্ডের অধীনে। যেহেতু রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট রেশম চাষ ও এর উন্নয়নে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, সেহেতু একে বোর্ডের বাইরে রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’
দেরিতে হলেও এ উদ্যোগকে শুভ উদ্যোগ হিসেবেই বিবেচনা করছেন সবাই। কালের আবর্তে নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে রূপ নেওয়া ‘রেশম বোর্ড’, ‘সিল্ক ফাউন্ডেশন ও `রেশম প্রশিক্ষণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট’কে একীভূত করার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে আবারও রেশমের সুদিন ফিরে আসবে বলে আশা করছেন সবাই।
বাংলাদেশে রেশম শিল্পের ইতিহাস অনেক প্রাচীন। সপ্তদশ শতাব্দী থেকে এ অঞ্চল ‘রেশম ভাণ্ডার’ হিসেবে পরিচিত। উপনিবেশ আমলে এ শিল্পের তেমন উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ ঘটেনি বরং ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে হাজির হয়। দেশভাগের পর তৎকালীন পাকিস্তান সরকারও এর উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। সে সময় রাজশাহীতে কেবল কয়েকটি নার্সারি, রেশম ও লাক্ষাশিল্প প্রযুক্তি ইন্সটিটিউট এবং রেশম কারখানা স্থাপন করা হয়।
এরপর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের একটি উপখাত হিসেবে রেশমশিল্পকে বিবেচনা করা হলেও এর অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় অর্থ ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা তেমন একটা পাওয়া যায়নি। ফলে, এ শিল্পের বিকাশ না হয়ে বরং বিনাশের দিকে আগাতে থাকে।
এ ৩টি প্রতিষ্ঠানকে একীভূতকরণ সম্পর্কে বাংলাদেশ রেশম বোর্ডের চেয়ারম্যান সুনীল চন্দ্র পাল বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিশ্বের যে সব দেশ রেশম চাষে সবার শীর্ষে, সে দেশগুলোতে রেশম সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান রেশম বোর্ডের অধীনে। যেহেতু রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট রেশম চাষ ও এর উন্নয়নে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, সেহেতু একে বোর্ডের বাইরে রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’
তিনি বলেন, ‘এ সংক্রান্ত একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি বোর্ডের বিদ্যমান আইন সংশোধন ও খসড়া অনুমোদনের জন্য প্রথমে আইন মন্ত্রণালয়ে এবং পরে সংসদে যাবে।’
বাংলাদেশ রেশম বোর্ডের চেয়ারম্যান সুনীল চন্দ্র পাল আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘বর্তমান সরকারের অধীনেই এ ৩টি প্রতিষ্ঠানকে একীভূতকরণের কাজ সম্পন্ন হবে।’ তা সম্ভব হলে রেশমের সুদিন ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন।
কিন্তু এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের সাথে আলাপ করে জানা যায় বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট কে রেশম বোর্ডর অধীনে নিলে গবেষণা ইন্সটিটউট টির কর্মকান্ড ব্যাহত হবে । অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা যায় যে, এ দুটি প্রতিষ্ঠান যখন এক ছিল তখন বোর্ড, গবেষণা-র উপর ডমিন্যান্ট করতো এবং গবেষণাকে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দিতনা । ফলে গবেষণা ইন্সটিটউট টি একটি পঙ্গু প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়েছিল ।তাই এই দুটি প্রতিষ্ঠান কে স্বতন্দ্র রেখেই সরকারের রেশম শিল্পের উন্নয়নের কথা ভাবা উচিৎ ।
রেশম বোর্ডের চেয়ারম্যান জানান, বর্তমানে রেশম বোর্ডের অধীনে রাজশাহী, ঢাকা, রংপুর, যশোর ও রাঙামাটিসহ মোট ৫টি আঞ্চলিক রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্র রয়েছে। জেলা রেশম সম্প্রসারণ কার্যালয় রয়েছে ১১টি। এছাড়াও রেশম বীজাগার ১০টি, গ্রেনেজ ২টি, তুঁতবাগান ৭টি, রেশম সম্প্রসারণ কেন্দ্র ৪০টি, রেশম সম্প্রসারণ উপকেন্দ্র ১শ ৬৪টি, মিনিফিয়েচার ১২টি, রেশম কারখানা ২টি এবং চাকী পলুপালন সেন্টার ২৭টি। এর মাধ্যমে ৪২ জেলা ও ১শ ৬৭ উপজেলায় রেশম চাষ সম্প্রসারিত হয়েছে।
এদিকে, রেশম শিল্পকে রক্ষার স্বার্থে সহজ শর্তে চাষীদের শিগগিরই রেশম চাষে ব্যাংক ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানালেন রেশম বোর্ডের উপ-প্রধান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবু তাহের সরদার।
এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের সম্মতির পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। তবে চূড়ান্ত অনুমোদনের পরই চাষীদের ঋণ সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে রেশম বোর্ডে লোকবলের সঙ্কট চলছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে অনুমোদিত পদ রয়েছে ৫শ ৩০টি। এর মধ্যে ১শ ৫০টি পদ নানা কারণে শূন্য রয়েছে। মাস্টার রোল কর্মচারী রয়েছেন মাত্র ৩০ জন।
তিনি জানান, এছাড়াও অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করছেন ৬ হাজারেরও বেশি শ্রমিক। অনুমোদিত পদগুলো শূন্য থাকায় রেশম বোর্ডের কাজকর্মে বিরাজ করছে স্থবিরতা।
উপ-প্রধান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবু তাহের সরদার আরো জানান, দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে রেশম বোর্ডকে পুনর্গঠিত করে জনবল সঙ্কট নিরসনের পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ে রেশম চাষীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা গেলে এ শিল্পের সুদিন ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে তিনিও একমত প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটউটের পরিচালক এম এ হামিদ মিয়া বলেন, রেশম শিল্পের উন্নয়নকল্পে -
১. বারেগপ্রই ইতোমধ্যে ৯টি উচ্চফলনশীল তুঁতজাত উদ্ভাবন করেছে যা মাঠ পর্যায়ে ব্যবহার করার ফলে তুঁত পাতার উৎপাদন বিঘা প্রতি বার্ষিক ২,০০০ কেজি থেকে ৫,০০০ কেজিতে উন্নীত হয়েছে।
২. ২৫টি উচ্চফলনশীল রেশম কীটের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে যার মধ্যে মাঠপর্যায়ে ৮টি জাত ব্যবহার করার ফলে ১০০ ডিমে রেশম গুটির গড় উৎপাদন ২৫ - ৩০ কেজির স্থলে ৬০ - ৭০ কেজিতে উন্নীত হয়েছে।
৩. পূর্বে ১টি রেশম গুটি হতে ২৫০ - ৩০০ মিটার সূতা পাওয়া যেত সেক্ষেত্রে বর্তমানে ৭০০ - ৮০০ মিটার সূতা পাওয়া যাচ্ছে।
৪. উন্নত তুঁতজাত ও উন্নত রেশম কীটের জাত মাঠ পর্যায়ে ব্যবহারের ফলে ১ বিঘা জমিতে তুঁতচাষ করে ১জন রেশম চাষী বছরে ১২০ কেজির স্থলে বর্তমানে ২৪০ কেজি রেশম গুটি উৎপাদন করছে । ফলে বর্তমানে একজন চাষী পূর্বের তুলনায় ২ - ২.৫০ গুণ বেশী মূল্য পাচ্ছেন।
৫. পূর্বে ১ কেজি রেশম সুতা পেতে ১৮ - ২০ কেজি রেশম গুটি প্রয়োজন হত। বর্তমানে সে স্থলে ৮ - ১০ কেজি গুটি প্রয়োজন হয়। ফলে ১ বিঘা রেশম চাষ করে বছরে ৬ কেজি সূতার স্থলে ২৪ কেজি রেশম সূতা পাওয়া যাচ্ছে।
৬. রেশম গুটি শুকানোর জন্য ড্রায়ার ও বিভিন্ন রিলিং মেশিনের কারিগরি উন্নয়ন সাধন করে এসব যন্ত্রপাতি বারেগপ্রই হতে তৈরী করা হচ্ছে। ফলে এসব যন্ত্রপাতি আমদানী করার প্রয়োজন হচ্ছে না এবং এসব যন্ত্রপাতি অর্ধেক মূল্যে তৈরী করা সম্ভব হচ্ছে।
৭. প্রশিক্ষণ কোর্সে পূর্বে বার্ষিক প্রশিক্ষণ প্রদানের গড় সংখ্যা ছিল ১২৭ জন, বর্তমানে বছরে ১৫৯ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
দেশে রেশম শিল্প বিকাশ ও সম্প্রসারণে বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট (বারেগপ্রই) টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। সম্প্রতি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বারেগপ্রই পরিদর্শন করেন এবং এ প্রতিষ্ঠান হতে উদ্ভাবিত বিভিন্ন উন্নত তুঁতজাত, রেশমকীটের জাত এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পুংখানুপুঙ্খ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি এ প্রতিষ্ঠানের আরও উন্নয়ন ও শক্তিশালী করণের জন্য কার্যক্রম গ্রহণের অভিমত ব্যক্ত করেন।
বর্তমানে চীন রেশম চাষ সংকোচন করায় আর্ন্তজাতিক বাজারে রেশম সূতার দাম বেড়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভারত ও ভিয়েতনাম রেশম চাষ সম্প্রসারণ করছে। বাংলাদেশও এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে রেশম চাষে ব্যাপক সম্প্রাসারণ ঘটাতে পারে। এ লক্ষ্যে বারেগপ্রই স্বতন্ত্র ও স্বকীয়তা বজায় থাকলে উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ কাজ ত্বরান্বিত করতে পারে এবং বাংলাদেশ রেশম বোর্ড ও রেশম চাষে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠান মাঠ পর্যায়ে রেশম চাষ সম্প্রসারণ কাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে উপকৃত হতে পারে। এ উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য দেশের অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ন্যায় বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট-কে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে রেখে যুগোপযোগী গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কাজে গতিময়তা আনার জন্য এ প্রতিষ্ঠানকে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন।
২. ২৫টি উচ্চফলনশীল রেশম কীটের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে যার মধ্যে মাঠপর্যায়ে ৮টি জাত ব্যবহার করার ফলে ১০০ ডিমে রেশম গুটির গড় উৎপাদন ২৫ - ৩০ কেজির স্থলে ৬০ - ৭০ কেজিতে উন্নীত হয়েছে।
৩. পূর্বে ১টি রেশম গুটি হতে ২৫০ - ৩০০ মিটার সূতা পাওয়া যেত সেক্ষেত্রে বর্তমানে ৭০০ - ৮০০ মিটার সূতা পাওয়া যাচ্ছে।
৪. উন্নত তুঁতজাত ও উন্নত রেশম কীটের জাত মাঠ পর্যায়ে ব্যবহারের ফলে ১ বিঘা জমিতে তুঁতচাষ করে ১জন রেশম চাষী বছরে ১২০ কেজির স্থলে বর্তমানে ২৪০ কেজি রেশম গুটি উৎপাদন করছে । ফলে বর্তমানে একজন চাষী পূর্বের তুলনায় ২ - ২.৫০ গুণ বেশী মূল্য পাচ্ছেন।
৫. পূর্বে ১ কেজি রেশম সুতা পেতে ১৮ - ২০ কেজি রেশম গুটি প্রয়োজন হত। বর্তমানে সে স্থলে ৮ - ১০ কেজি গুটি প্রয়োজন হয়। ফলে ১ বিঘা রেশম চাষ করে বছরে ৬ কেজি সূতার স্থলে ২৪ কেজি রেশম সূতা পাওয়া যাচ্ছে।
৬. রেশম গুটি শুকানোর জন্য ড্রায়ার ও বিভিন্ন রিলিং মেশিনের কারিগরি উন্নয়ন সাধন করে এসব যন্ত্রপাতি বারেগপ্রই হতে তৈরী করা হচ্ছে। ফলে এসব যন্ত্রপাতি আমদানী করার প্রয়োজন হচ্ছে না এবং এসব যন্ত্রপাতি অর্ধেক মূল্যে তৈরী করা সম্ভব হচ্ছে।
৭. প্রশিক্ষণ কোর্সে পূর্বে বার্ষিক প্রশিক্ষণ প্রদানের গড় সংখ্যা ছিল ১২৭ জন, বর্তমানে বছরে ১৫৯ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
দেশে রেশম শিল্প বিকাশ ও সম্প্রসারণে বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট (বারেগপ্রই) টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। সম্প্রতি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বারেগপ্রই পরিদর্শন করেন এবং এ প্রতিষ্ঠান হতে উদ্ভাবিত বিভিন্ন উন্নত তুঁতজাত, রেশমকীটের জাত এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পুংখানুপুঙ্খ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি এ প্রতিষ্ঠানের আরও উন্নয়ন ও শক্তিশালী করণের জন্য কার্যক্রম গ্রহণের অভিমত ব্যক্ত করেন।
বর্তমানে চীন রেশম চাষ সংকোচন করায় আর্ন্তজাতিক বাজারে রেশম সূতার দাম বেড়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভারত ও ভিয়েতনাম রেশম চাষ সম্প্রসারণ করছে। বাংলাদেশও এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে রেশম চাষে ব্যাপক সম্প্রাসারণ ঘটাতে পারে। এ লক্ষ্যে বারেগপ্রই স্বতন্ত্র ও স্বকীয়তা বজায় থাকলে উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ কাজ ত্বরান্বিত করতে পারে এবং বাংলাদেশ রেশম বোর্ড ও রেশম চাষে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠান মাঠ পর্যায়ে রেশম চাষ সম্প্রসারণ কাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে উপকৃত হতে পারে। এ উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য দেশের অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ন্যায় বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট-কে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে রেখে যুগোপযোগী গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কাজে গতিময়তা আনার জন্য এ প্রতিষ্ঠানকে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন